এলাকার রেশন ডিলারশিপ ফুড লাইসেন্স পেতে মোটা অংকের অর্থ দিতে হবে ফুড ইন্সপেক্টর কে, এলাকার আবেদনকারীদের বাদ দিয়ে অন্য সাব ডিভিশনের ব্যবসায়ীকে পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগে পঞ্চায়েত ঘেরাও করে বিক্ষোভ এলাকাবাসীদের
মলয় দে নদীয়া:- এলাকার রেশন ডিলারশিপ লাইসেন্স পেতে সই করতে হচ্ছে সাদা কাগজে, ইন্সপেকশনে এসে ইচ্ছাকৃতভাবে দোকান ঘরের মাপ ছোট দেখিয়ে ক্যানসেল করে পঞ্চাশ হাজার টাকার দাবি, নিয়ম বহির্ভূতভাবে সকলের আবেদন বাতিল করে অন্য সাব ডিভিশন থেকে প্রমাণপত্র বিহীন ব্যক্তিকে মোটা অর্থের বিনিময়ে পাইয়ে দেওয়া হচ্ছে রেশন ডিলারশিপ সরকারি আধিকারিক এর বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগে বিক্ষোভ পঞ্চায়েত অফিসে।
চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি নদীয়ার শান্তিপুর বাগআচড়া পঞ্চায়েতে। পঞ্চায়েতের অন্তর্গত করমচা পুলি গ্রামে একটি রেসন ডিলারশিপ লাইসেন্স দেওয়ার সরকারি বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী সেখানকার মানুষজন আবেদন করলেও তাদেরকে ইচ্ছাকৃতভাবে বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে অনুপোযোগী প্রমাণ করে মোটা অর্থের বিনিময়ে দেওয়া হচ্ছে কৃষ্ণনগর সাব ডিভিশনের দিগনগর পঞ্চায়েতের বাসিন্দা প্রসিদ্ধ ব্যবসায়ী মৃন্ময় পাত্রকে ।
বিজেপি পরিচালিত বাগআচড়া পঞ্চায়েতে প্রধান রোহিত জানের বিরুদ্ধে উঠেছে কোন রকম প্রমাণ পত্র ছাড়াই এই লাইসেন্স পাইয়ে দেওয়ার জন্য স্থায়ী বাসিন্দার শংসাপত্র দেওয়ার অভিযোগ। যদিও আবেদন করার বেশ কিছুদিন বাদে জমি কেনা দোকান ঘর নির্মাণ ভোটের ঠিকানা পরিবর্তন এসব তড়িঘড়ি করা হচ্ছে এখন।
অভিযোগকারীদের দাবি তারা এর আগে বিষয়টি নিয়ে পঞ্চায়েত বিডিও অফিস জেলা খাদ্য দপ্তর এমনকি জেলা শাসকের কাছেও সমবেত ভাবে লিখিত প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন তার কোন সুরাহা না হওয়ায় আজ এই প্রতিবাদ। অন্যদিকে আন্দোলনকে সমর্থন জানাচ্ছেন ওই পঞ্চায়েতের তৃণমূলের বিরোধী দলনেতা মনোজ সরকার এবং বেশ কিছু পঞ্চায়েত সদস্য তারাও জানাচ্ছেন কথায় কথায় রাজ্য সরকারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব হওয়া বিজেপি প্রধান সরকারি আধিকারিকদের সাথে নিয়ে বিজেপি পরিচালিত শান্তিপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পর্যন্ত এর সাথে যুক্ত। গ্রামের সাধারণ মানুষ তাদের পঞ্চায়েত সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক অফিসের সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত থাকবেন আর অন্য সাব ডিভিশন থেকে কেউ এসে সেই সুযোগ নেবে তা হতে দেওয়া যাবে না এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন ও সরকারি কর্তৃপক্ষ এবং দলীয় স্তরেও জানানো হবে।
যদিও এ প্রসঙ্গে অভিযুক্ত সরকারি আধিকারিক আজিজুল পাশার জানান সমস্ত প্রমাণপত্র দেখে তবেই আবেদন মঞ্জুর করা হয়েছে, যাদের ক্যানসেল হয়েছে তারা প্রমাণ করুক সরকারি নিয়ম অনুযায়ী তাদের প্রয়োজনীয় দোকান ঘর ঠিকঠাক আছে কিনা টাকা নেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না, সাদা কাগজে কেনই বা তারা সই করবেন। বিষয়টি শুধুমাত্র ফুড ইন্সপেক্টর এর হাতে থাকে না সমস্ত তথ্য এবং প্রমান দেখে তবেই আবেদন মঞ্জুর করা হয়।
অন্যদিকে পঞ্চায়েত প্রধান রোহিত জান জানান, যেহেতু শংসাপত্র তে মেমো নাম্বার দেওয়া আছে তাই স্পষ্ট সেটা পঞ্চায়েত অফিস থেকে দেওয়া হয়েছে সেখানে নিশ্চয়ই প্রমাণপত্র দেখে তবেই দেওয়া হয়েছে। মূল অভিযুক্ত মৃন্ময় পাত্র নামে আবেদনকারী ওই ব্যবসায়ী এই এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা কিনা সে প্রসঙ্গে দূরাভাষে তিনি বলেন ভোটের কার্ড আধার কার্ড রেশন কার্ড সমস্ত ধরনের প্রমাণ এমনকি ভোটার লিস্টের নাম সবকিছুই তার বাগআচড়া পঞ্চায়েতের করমচাপুলি গ্রামে। আর সে সমস্ত দেখে তবেই আবেদন মঞ্জুর করা হয়েছে সরকারি অনুসন্ধান হওয়ার পর ।
যদিও এ প্রসঙ্গে এলাকাবাসীর অভিযোগ প্রায় এক বছর আগে আবেদন করা হয়েছিল তখন তার ভোটার লিস্টে নাম কিংবা পরিচয় পত্রের ঠিকানা ছিল দিগনগর যা কয়েক মাস আগে লোকসভা ভোটের নিরিখে পরিবর্তন করা হয়েছে এমনকি এখনো পর্যন্ত জমির শ্রেণি পর্যন্ত পরিবর্তিত হয়নি বাগান বলে উল্লেখ আছে দোকান ঘর নির্মাণ হয়েছে পঞ্চায়েতের প্ল্যান পাস ছাড়াই অথচ তার ক্ষেত্রে অসুবিধা নেই, কিন্তু গ্রামের সাধারণ মানুষ যখন আবেদন করেছেন তখন তাদেরকে ইচ্ছাকৃতভাবে বিভিন্ন বিষয়ে ভুল প্রতিপন্ন করে সকলের আবেদন খারিজ করে দেওয়া হয় ।