মলয় দে নদীয়া :- জাতির মেরুদন্ড শিক্ষক। মৌলিক অধিকার শিক্ষা গ্রহণের। সুন্দর কথাগুলো শোভা পায় বক্তৃতায়, আইন প্রণয়নে, ধুলো জমা বইয়ের পাতায়, বাস্তবে ক্যারিয়ার তৈরির জন্য সচেষ্ট হতে হবে অভিভাবক কেই !তাদের সাথে কথা বলে বোঝা গেলো এ কথা বুঝে গেছেন প্রায় সকল অভিভাবক। দীর্ঘ লকডাউনে সরকারি বেতনভোগী শিক্ষক শিক্ষকিরা তাদের সংগঠনের স্ত্রী বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে সাধ্যমত সহযোগিতা করেছেন, বাড়ি বাড়ি গিয়ে পড়ানোর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন ঠিকই! কিন্তু তা কতটুকু আন্তরিক ছিল বা নিজের সন্তানের তুল্য মূল্য বিচারে কতটুকু সচেতন ছিলেন , তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন অভিভাবকেরা। মিড-ডে-মিল দেওয়ার সাথে দুবার মাত্র দু’টি প্রশ্ন পত্র দেয়া হয়েছিলো ! যা থেকে কোন ভাবেই বোঝা সম্ভব নয়, যে সেটা তার অভিভাবকের সাহায্য ছাড়াই করেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় বিদ্যালয়ের নিজস্ব প্রোফাইল থেকে ফেসবুক এবং হোয়াটসঅ্যাপে এ ধরনের দু-একটা প্রশ্নপত্রও চোখে পড়েনি এমন টা কিন্তু নয়! তবে তা থেকে আর যাই হোক মূল্যায়ন হয় না বলেই মনে করেন অনেকে! পশ্চিমবঙ্গ সরকারের শিক্ষা দপ্তরের একটি ওয়েব পোর্টালে প্রশ্ন উত্তর ব্যবস্থা থাকলেও তা বিদ্যালয়ের কত শতাংশ ছাত্র-ছাত্রী দেখেছে, বা তার পরিবারের দেখার ব্যবস্থা করতে পেরেছে তা নিয়েও সন্দেহের অবকাশ নেই। জাতীয় বিপর্যয় ঘোষণা হওয়ার পরও, এ দল থেকেও দলে যোগদানের হিড়িক পর্ব কিন্তু কমেনি! প্রতিমা নিরঞ্জন হোক বা রাজনৈতিক সভা সমিতি ! আইনি শাসন কিন্তু দেখা যায়নি। কিন্তু এই এক বছরে, শিশুর মেধা অন্বেষণে বা শিক্ষা প্রসারে চাল আলু সোয়াবিন আয়রন ট্যাবলেটেই দায় সেরেছে সরকার।
তাই এ বছর কোন মূল্যায়ন ছাড়াই গতবছরের মেধা তালিকা অনুযায়ী নতুন শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হয়েছেন সকলেই। গর্বের সঙ্গে বিদ্যালয় কমিটিগুলো গলা ফাটাচ্ছেন “বিগত বছরের ন্যায় একই ভর্তি ফিস বহাল রেখেছে আমরা! এক পয়সাও বাড়ায়নি।” কমাননি কেন সে প্রশ্ন করা যাবে না, ওই বিদ্যালয়ে নিজের ঔরসজাত সন্তানের মঙ্গলার্থে! সে যাই হোক আমতা-আমতা করে কয়েকজন অভিভাবক প্রশ্ন তুলেছিলেন তাহলে 270 টাকার ভর্তি, নশো হাজার, বারোশো,
পনেরশো কেনো? উত্তরে জানা যায়, সহকারী পার্শ্ব শিক্ষক শিক্ষিকার বেতন, কম্পিউটার অপারেটর, বিদ্যালয়ের শৌচাগার পরিষ্কার, এই রকম নানারকম খরচ জোগাতে হিমশিম খাচ্ছেন পরিচালন সমিতি, তাই বোঝা খানিকটা হাল্কা করতে, লকডাউনে দীর্ঘদিন কর্মহীন থাকা অভিভাবকের কাঁধে চাপিয়ে দিয়েছেন তারা। বিদ্যালয়ের উন্নয়ন তহবিল, সরস্বতী পুজো, এগুলোর কি খুব প্রয়োজন এ বছরও? যদিও “আদার্স” নামক একটি শব্দের তলায় চাপা থাকে এ ধরনের বিবিধ বিষয়! তাই প্রমাণ জোগাড় যথেষ্ট দুঃসাধ্য। এমনটাই মনে করেন অভিভাবকবৃন্দ। তাদের প্রশ্ন সকলের জন্য শিক্ষার প্রচারক সরকারের দায়-দায়িত্ব তাহলে কি ?
সে যাই হোক এ ধরনের নানা মান অভিমান মনে চেপে রেখেই , “আমার সন্তান যেন থাকে দুধে-ভাতে” অভিভাবকদের জন্য শুরু হয়েছে নতুন শ্রেণীতে ভর্তি, সামান্য হলেও কিছু পাঠ্যপুস্তক বিতরণ।