মরণোত্তর কর্নিয়া প্রদানের কারণেই শান্তিপুর এবং সংগ্রহকারী সংস্থা মরমীর নাম দেশে-বিদেশে ডাক টিকিটের মাধ্যমে পৌঁছে দিচ্ছেন সর্বমঙ্গলা দেবী
মলয় দে নদীয়া:-
২০১১ সালে পথ চলা শুরু করে শান্তিপুরের অন্যতম সংগঠন শান্তিপুর মরমী।
২০২৫ সালে তাদের 15 বছরে পা। তাই ১৫ বছর পথ চলাকে স্মরণীয় করে রাখতে এক বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করে শান্তিপুর মরমী। ইতিমধ্যে ২০১৪ সাল থেকে তারা শান্তিপুরের একমাত্র সংগঠন যারা মরণোত্তর চক্ষুদানে সাধারণ মানুষকে অবগত করেন এবং মৃত মানুষদের কাছ থেকে কর্নিয়া সংগ্রহ করে যে সমস্ত মানুষ আজ কর্নিয়ার দরকার তাদেরকে কর্নিয়া পৌঁছে দিতে সাহায্য করেন। ১৫ বছর উদযাপন উপলক্ষে তারা মাই স্ট্যাম্প নামে একটি স্মারক ডাক টিকিট প্রকাশ করেন। এই ডাকটিকিট ইন্ডিয়ান পোস্ট অর্থাৎ ডাক বিভাগের সহযোগিতায় তৈরি করা হয়েছে। হবে সাধারণ পোস্ট অফিসের এই ডাকটিকিট পাওয়া যাবে না যেহেতু স্মারক ডাক টিকিট তাই শান্তিপুর মরমী সংগঠনের কাছ থেকেই এই ডাকটিকিট নিয়ে সাধারণ মানুষ চিঠিপত্র পাঠাতে গেলে তাতে ব্যবহার করতে পারবেন ভারতীয় ডাক বিভাগ চূড়ান্ত সেলমোহর দিয়ে দিয়েছে ইতিমধ্যেই। অপরদিকে শান্তিপুর মরমীর পক্ষ থেকে যদি কোন জায়গায় চিঠিপত্র পাঠাতে হয় সেখানে এই মাইক স্ট্যাম্প স্বারক ডাকটিকিট তারা ব্যবহার করবেন।
শান্তিপুরের প্রথম কর্নিয়া প্রদানকারী শান্তিপুর সুত্রাগড় এলাকার সর্বমঙ্গলা দে র মৃত্যুর পর পরিবার শান্তিপুর মরোমিকে কর্নিয়া প্রদান করেছিলেন ২০১৪ সালে। তারপর তার স্বামী এবং মেয়ের ও মরণোত্তর কর্নিয়া প্রদান করে। তাই সর্বমঙ্গলা দেবীকে বিশেষভাবে মনে রাখতে এবং তাকে সম্মান জানাতে এই ডাকটিকিতে তার ছবি প্রকাশ পায়। এ বিষয়ে শান্তিপুর মরমের অন্যতম সদস্য তপন মজুমদার জানান শান্তিপুর মরমির প্রধান লক্ষ্য এক হাজার কর্নিয়া সংগ্রহ করা 2025 এর মধ্যে তা সম্ভব হবে বলে আশাবাদী তিনি। ওদিকে অজয়দে আই মেমোরিয়াল সেন্টারে শিবতোষ বন্দ্যোপাধ্যায় নামে যে ব্যক্তি প্রথম কর্নিয়া প্রদান করেছিলেন তার বিষয়েও বিশেষ চিন্তাভাবনা করে তাকে স্মরণ করতে বিশেষ পদক্ষেপ হতে চলেছে শান্তিপুর মরমী। অপরদিকে সর্বমঙ্গলা দেবীর জামাতা জামাচ্ছেন যে কার্যক্রম শান্তিপুর মরমী করছে তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। প্রথম কর্নিয়া প্রদান করেছিলেন তার শাশুড়ি মা তারপর তার শ্বশুরমশাই এবং পরবর্তী তার স্ত্রী একই বাড়ি থেকে তিন তিনটে কর্নিয়া সংগ্রহ করে শান্তিপুর মরমী। অপরদিকে তার শাশুড়ি র ডাক টিকিট সারা ভারতবর্ষে ঘুরবে এতে তিনি আরো প্রশংসা বোধ করছেন। তবে সাধারণ মানুষ এখনো যারা সচেতন নন তাদেরকে সচেতন হওয়ার মিজানও দিয়েছেন সর্বমঙ্গলা দেবীর পরিবারের লোকজন। বলেন মৃত্যুর পর কবরের হোক কিংবা শ্মশানে দেহ বিনষ্ট হয় আগুনে কিংবা মাটিতে সেক্ষেত্রে কারখানায় তৈরি না হওয়া সামান্য চোখের উপরের একটি পাতলা মাছের আঁশের মতন অংশ দিয়ে যদি চির অন্ধ মানুষের চোখে আলো ফোটানো যায় তার থেকে পুণ্যের কাজ আর কি আছে!
সম্প্রতি শান্তিপুর পাবলিক লাইব্রেরী হলে বিধায়ক ব্রজকিশোর গোস্বামীর বিধায়ক তহবিল থেকে শান্তিপুর বিধানসভা এলাকায় শবদেহ বহনকারী “রৈবতক” অনুষ্ঠান সূচনা লগ্নে এই ডাক টিকিটেরও শুভ উন্মোচন ঘটে। শান্তিপুরের কোনো ব্যক্তির স্মরণে ডাকটিকি প্রকাশ এর আগে হয়েছে বলে জানা নেই বলেই জানিয়েছেন অনেকেই।