পুজোর মরশুমে এখন অনলাইন কেনাকাটা বাড়ছে।ইউপিআই আইডি ও লিঙ্কের মাধ্যমে অনেকেই আর্থিক লেনদেনে অভ্যস্থ হয়ে পড়েছেন। ব্যবসায়ীরা পণ্য কেনাবেচা করতে অনলাইন প্রযুক্তির ব্যবহার করছেন। আর্থিক লেনদেন করতে গিয়ে বহু মানুষ সাইবার প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। ঝাড়গ্রাম সাইবার বিভাগ প্রতরণা রুখতেন্যাশনাল সাইবার ক্রাইম রিপোর্টিং পোর্টাল নিয়ে প্রচার শুরু করেছে।পোর্টালে অজানা ফোন নম্বর, লিঙ্ক ও ইমেল নথিভুক্ত করে চেক করলেই প্রতারণা করা হচ্ছে কিনা জানা যাবে।
ঝাড়গ্রাম জেলার ডিএসপি সব্যসাচী ঘোষ বলেন, অনলাইন আর্থিক লেনদেনে প্রতারিত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।মোবাইল ফোনে অজানা ফোন নম্বর, লিঙ্ক ও ইমেল আসল না নকল, তা ন্যাশনাল সাইবার ক্রাইম রিপোর্টিং পোর্টালে সহজে যাচাই করা যায়। পোর্টালটির বিষয়ে সর্বস্তরের মানুষ যাতে জানতে পারেন তারজন্য লাগাতার প্রচার চালানো হচ্ছে।
সাইবার প্রতারকরাঅনলাইন আর্থিক পরিষেবার ক্ষেত্রেও ঢুকে পড়ছে।ই – কমার্স প্ল্যাটফর্ম, ব্যাঙ্কের ওয়েবসাইটের নকল ওয়েবসাইট বা অ্যাপ তৈরি করে প্রতারণাচালাচ্ছে। ফ্রি ভাউচার, কখনও টাকা ফেরত দেওয়ার মেসেজ পাঠানো হচ্ছে। কখনও আবার পার্সেল দেওয়া বা লেনদেন সম্পূর্ণ করতে পাসওয়ার্ড বা ওটিপি পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। যাচাই না করেই যারা ওয়েবসাইট বা অ্যাপে আর্থিক লেনদেন করছে, তাঁরা প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। ব্যঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা উধাও হয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে ছোট দোকান, বাজার, হাটে বেচাকেনা ইউপিআই প্রযুক্তির মাধ্যমে হচ্ছে।মোবাইল ফোনে অনবরত নানা মেসেজ ঢুকছে। অনেকেই স্বেচ্ছায়, কখনও আবার ভুলবশত অজানা লিঙ্ক খুলে ফেলছেন। বেশকিছু ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে সাইবার প্রতারকরা ক্রেতাদের মূল ওয়েবসাইট বা অ্যাপের বাইরে আলাদা ইউপিআই আইডি, লিঙ্কের মাধ্যমে লেনদেন করার জন্য বলছে। যাঁরা রাজি হচ্ছেন, তাঁরা সাইবার প্রতারকদের ফাঁদে পড়ছেন। ন্যাশনাল পেমেন্টস কর্পোরেশনের তরফে সাধারণ মানুষকেবিষয়টি নিয়ে লাগাতার সতর্ক করা হচ্ছে। ঝাড়গ্রামের মতো প্রান্তিক জেলায় অনলাইন আর্থিক লেনদেন বাড়ছে। পাল্লা দিয়ে প্রতারণার ঘটনা বাড়ছে। জেলার সাইবার বিভাগ প্রতারণার হাত থেকে বাঁচতে ন্যাশনাল সাইবার ক্রাইম রিপোর্টিং পোর্টাল নিয়ে জোর প্রচার শুরু করেছে।যেকোনও সাধারণ মানুষ এখন ‘এনসিআরপি’ পোর্টালে অজানা ফোন নম্বর, লিঙ্ক ও ই-মেল নথিভুক্ত করে চেক করলেসহজে জানতে পারবেন মোবাইলে আসা মেসেজ জাল কিনা। আসল লিঙ্ক হলে নির্ভয়ে আর্থিক লেনদেন করা যাবে। নকল হলেও মানুষ সতর্ক হতে পারবেন।জেলা সাইবার বিভাগের এক অফিসার বলেন, এনসিআরপি পোর্টাল খুলে আর্থিক লেনদেন ক্রাইম অপশন পেজে যেতে হবে । সেখানে অজানা ফোন নম্বর, কোন ব্যাঙ্কের ওয়েবসাইট, অ্যাপের লিঙ্ক নথিভুক্ত করে চেক করলেই আসল বা নকলের বিষয়টি জানা যাবে। মোবাইল ফোনে আর্থিক লেনদেন করার সঙ্গেই এই বিষয়গুলি জানাপ্রয়োজন হয়ে পড়েছে। জেলারমানুষের নিত্যদিনের কেনাকাটায় অনলাইন লেনদেন বেড়েছে। সাইবার বিভাগের তরফে বিষয়টি নিয়েধারাবাহিক প্রচার চালাচ্ছে।
সংস্কারের পর বছর ঘুরতে না ঘুরতেই পূর্ব বর্ধমানে বিভিন্ন রাস্তার হতশ্রী দশা হয়েছে। মোটা টাকা খরচ করে আবার রাস্তা সংস্কার করতে হচ্ছে। নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে রাস্তা তৈরির জন্যই এই পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে বলে আধিকারিকদের দাবি। এই সমস্ত ঠিকাদারদের চিহ্নিত করে কালো তালিকাভুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এক শ্রেণির জনপ্রতিনিধি নিজেদের পছন্দের লোকজনদের কাজ পাইয়ে দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। তার বিনিময়ে তাঁদের পকেটও ভারী হচ্ছে। অনলাইন টেন্ডার হলেও জনপ্রতিনিধিদের কাছের নির্দিষ্ট কয়েকজন ঠিকাদার কাজ পাচ্ছে। তারা কাজ না পেলে অনেক সময় বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে টেন্ডার প্রক্রিয়া বাতিল করে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। সব জায়গাতেই সিন্ডিকেট তৈরি হয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের টাকায় আবার রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু হবে। পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি বা জেলা পরিষদ এই কাজ করবে। নিজেদের লোকজনদের কাজ পাইয়ে দিতে যাতে কোনও রকমে অনিয়ম না হয়, তারজন্য বিশেষ নজরদারি রয়েছে। এক আধিকারিক বলেন, গত বছর জেলার বিভিন্ন প্রান্তের রাস্তা সংস্কার হয়েছিল। অধিকাংশ রাস্তায় এখন বেহাল হয়ে গিয়েছে। খণ্ডঘোষ, রায়না, জামালপুর সহ বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা সমস্যায় রয়েছেন। এখন গ্রামীণ রাস্তায় ওভারলোডিং গাড়ি চলাচলও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তারপরও রাস্তা বেহাল হয়ে যাওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে। নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করার জন্যই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এবার থেকে রাস্তা তৈরির কাজ করার সময় ইঞ্জিনিয়াররা একাধিকবার পরিদর্শন করবেন। তারা ‘জল মেশানো’ রিপোর্ট দিলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কয়েকজন ইঞ্জিনিয়ার নজরে রয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের টাকায় কোন কোন রাস্তা সংস্কার করা হবে সেই তালিকা তৈরি করা হয়েছে। গ্রামীণ এলাকার পাশাপাশি শহরের রাস্তাগুলির হাল খারাপ হয়ে গিয়েছে। জেলা সদর বর্ধমান শহরেও বহু রাস্তা বেহাল হয়ে রয়েছে। বর্ধমান পুরসভার চেয়ারম্যান পরেশচন্দ্র সরকার বলেন, রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। বেশকিছু রাস্তায় পেভারব্লক বসানো হচ্ছে। পুজোর আগে তড়িঘড়ি রাস্তাগুলি খানাখন্দ ভরাট করা হয়েছিল। এখন ভালোভাবে রাস্তা সংস্কার করা হচ্ছে। কাজ খারাপ হলে সেই ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রশাসনের দাবি, জেলাজুড়েই কয়েকজন ঠিকাদার নজরে রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অতীতেও বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। ওই ঠিকাদাররা এবারও নিম্নমানের কাজ করলে তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সংস্কারের পর নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেওয়া হবে। ওই সময়ের মধ্যে রাস্তা খারাপ হলে ঠিকাদারকে তা মেরামত করতে হবে। তা নাহলে টাকা আটকে দেওয়া হবে।




