রেল কর্তৃপক্ষের স্বাস্থ্যবিধি উধাও, পারস্পরিক দূরত্ব শিকেয় তুলে দুই ট্রেনের যাত্রী এক ট্রেনে

মলয় দে, নদীয়া, ১৮ ডিসেম্বর :- নাটকীয়তায় ভরপুর এই সমাজ। জনগণ থেকে সরকার প্রত্যেকেরই আনুষ্ঠানিক বাগ্মীতায় অনেক কথাই শুনে থাকি। কিন্তু বাস্তবতার প্রয়োগে পার্থক্য থাকে আকাশ পাতাল ! কিছুদিন আগেই স্টেশনে পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য চক দিয়ে আঁকা হয়েছিলো বৃত্ত, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা সদস্যরা নিয়োজিত হয়েছিলো দেহের তাপমাত্রা নির্ণয়ক যন্ত্র নিয়ে, কর্তব্যরত আরপিএফ এর সংখ্যা বৃদ্ধি হয়েছিল মুখে মাস্ক আছে কিনা তা দেখার জন্য, এমনকি তিনটি যাত্রী আসনের মাঝখানে না বসার সতর্কবার্তা লেখা ছিলো। কিন্তু সেই প্রথম দুই একটা দিনের জন্য! তারপরে সেই ভীড় ঠেসাঠেসি চিরাচরিত দৃশ্য।

লকডাউন এর পূর্বের শিয়ালদা শান্তিপুর ট্রেন যোগাযোগের বেশ কয়েকটি ট্রেন বর্তমানে বন্ধ। যার মধ্যে অন্যতম সকাল ৮.৪৫ডাউন শান্তিপুর শিয়ালদা লোকাল। ঠিক তার আগের ট্রেনটি গ্যালোপিন নটি কামরা বিশিষ্ট। অথচ ওই ট্রেনটি এর আগে বারোবগি হিসেবেই চলতো, নিয়মিত যাত্রী পরিষেবা অফিস টাইমে, তাতেই ছিল উপচে পড়া ভিড়। পরের ট্রেনটি বাতিল এবং অফিস টাইমে গুরুত্বপূর্ণ ৭টা ২৮ এর এই ট্রেনটি বারো বগির জায়গায় নয় বগি হওয়ায়, শান্তিপুর থেকেই তিন আসনে চারজন বসার পরেও, যাত্রীরা দাঁড়িয়ে যাচ্ছেন সেই ট্রেনে। টানা তিন ঘন্টা এভাবেই পৌঁছাতে হচ্ছে গন্তব্যে। তার উপর পর পর বিভিন্ন স্টেশন থেকে ক্রমাগত ওঠা যাত্রীর চাপে ব্যারাকপুর শ্যামনগর অঞ্চল পৌঁছানোর পর পারস্পরিক দূরত্ব তো অনেক দূরের কথা এক আত্মা হোক বা না হোক, এক দেহে বিলীন হয়ে যাচ্ছেন প্রত্যেকেই। হাঁচি-কাশি নিয়ে ঠান্ডা লড়াই চলছে প্রতিনিয়ত। শুধু এ ব্যাপারে নয়, প্রতিটি সমস্যার ক্ষেত্রেই রেলযাত্রী সমিতির গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারীদের সই সম্বলিত স্টাম্পপ্যাড দিয়ে দেয়ালের কাছে একটি ডেপুটেশন সংঘটিত হয় বটে, তবে নিত্যযাত্রীদের মতে তা নিছকই ফর্মালিটিজ।