সাংসদ পদ বহাল রাখতে বিধায়ক পদ থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত জগন্নাথ সরকারের, আবারো উপনির্বাচনের মুখে শান্তিপুর বিধানসভা

গত 2019 সালে লোকসভা ভোটে রানাঘাট তপশিলি কেন্দ্রে সাংসদ হিসেবে তৃণমূলের প্রার্থী রুপালি বিশ্বাস কে পরাজিত করে জয়ী হন জগন্নাথ সরকার। এরপর 2021 সালে বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যের বেশকিছু সংসদের মত শান্তিপুর বিধানসভা সাংসদ পদ থাকা সত্ত্বেও বিধায়ক পদপ্রার্থী করেছে ভারতীয় জনতা পার্টি।
শান্তিপুর বিধানসভায় বিজেপি জগন্নাথ সরকার তৃণমূল প্রার্থী অজয় দেকে পরাজিত করে জয়লাভ করার পর থেকেই রাজনৈতিক মহল থেকে সাধারণ মানুষের মধ্যে গুঞ্জন শুরু হয়েছিল কোন পদ রাখতে চলেছে তিনি ? বেশিরভাগ রাজনৈতিক সচেতন মানুষের বক্তব্য ছিলো, ব্যক্তিগত ভাবে তিনি সাংসদ পদ থেকেই পছন্দ করবেন এই কারণে, সেখানে কাজ করার সুযোগ অনেক বেশি এলাকা জুড়ে, উন্নয়ন তহবিলের পরিমাণও বেশি। সাথে জনপ্রতিনিধি হিসেবে সরকার কর্তৃক প্রাপ্ত মাইনে এবং সুযোগ সুবিধাও অনেক বেশি। তবুও প্রশ্ন ছিল একটাই! সাংসদ হিসাবে বিজেপির কাছে একটি সংখ্যা খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ নয়, যতটা পশ্চিমবঙ্গে একটি বিধায়কের সংখ্যাবৃদ্ধির উদ্দেশ্যে একজন বিধায়কের গুরুত্ব। নির্বাচনের প্রাক্কালে প্রধানমন্ত্রী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দলীয় সভাপতি বিভিন্ন মন্ত্রীদের আনাগোনা থেকেই একথা মনে হয়েছে তাদের।
সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে আজ দুপুর 1 টা নাগাদ বিধানসভার স্পিকারের নিকট পদত্যাগপত্র জমা করেন সদ্য জয়লাভ করা শান্তিপুর বিধানসভার বিধায়ক জগন্নাথ সরকার। এ ব্যাপারে তিনি জানান, দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কিরে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। তাকে নির্বাচিত করে শান্তিপুরের সাধারণ মানুষ হতাশ এ প্রসঙ্গে তিনি জানান , “আমার জানা নেই তারা হতাশ হচ্ছেন ! হয় তারা বিষয়টি বুঝতে পারেননি অথবা তাদের রাজনৈতিকভাবে ভুল বোঝানো হচ্ছে। একজন বিধায়কের তুলনায় একজন সাংসদ থাকা এলাকার উন্নয়নের নিরিখে অনেকটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। করো না পরিস্থিতির মধ্যে, আবারো জেনেশুনে একটি উপনির্বাচনের খরচ, মানুষের হয়রানি , প্রচারে জমায়েত হওয়ার মতো নানা প্রশ্নের উত্তরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন এ বিষয়ে দল জানে।
শান্তিপুর শহর তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অরবিন্দ মৈত্র এ প্রসঙ্গে জানান, “অত্যন্ত নিন্দনীয় এবং উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে শান্তিপুরের মানুষকে বিপদে ফেলা হয়েছে! কোভিদ পরিস্থিতিতে বিধায়ককে পাশে না পাওয়ার যোগ্য জবাব দেওয়ার জন্য শান্তিপুরের মানুষ প্রস্তুত আছে।
সিপিআইএম লোকাল কমিটির সম্পাদক সৌমেন মাহাতো জানান “কোভিদ মোকাবেলায় যেখানে সারা দেশের মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়েছেন প্রতিকারের জন্য! সেখানে রাজনৈতিক দলগুলিকে বাধ্য করছে পূর্ণ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্য। সাধারণ মানুষের অর্থে আবারো জোর করে চাপিয়ে দেওয়া হবে উপনির্বাচন। যদিও এটা তাদের দলীয় ব্যাপার, তবু আমার ব্যক্তিগতভাবে মনে হয় এটা এ অতিমারির সময় মানুষের পাশে না থেকে দায়িত্বজ্ঞানহীন একটি সিদ্ধান্ত।