সর্বসাধারণের জন্য বরাদ্দ করোনা টিকা তে ভাগ বসানো কেন্দ্রীয় নিরাপত্তারক্ষীদের কারণেই কি আকাল?

ভোটের কারণে ভোটকর্মী হিসাবে ভ্যাকসিন দিতে হচ্ছে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের।ফলে সাধারণ মানুষদের জন্য সংরক্ষিত ভ্যাকসিনে পড়ছে টান। ভ্যাকসিন আসছে না সেই পরিমাণে, তার ওপরে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের ভ্যাকসিন দেওয়ার কারণে সাধারণ মানুষ ভ্যাকসিন পেতে সমস্যায় পড়ছেন।ভিন রাজ্য থেকে আসা কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা কেউ নিচ্ছেন দ্বিতীয় ডোজ, কেউবা নিচ্ছেন প্রথম ডোজ।জেলা প্রশাসনের নির্দেশ মেনে ভোটকর্মী হিসাবে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের ভ্যাকসিন দিতে বাধ্য হতে হচ্ছে জেলা স্বাস্থ্যদফতরকে।কোন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান হয়তো মহারাষ্ট্রে বা গুজরাট থেকে নিয়ে এসেছেন প্রথম ডোজ, সেই জওয়ান এই জেলায় ডিউটি করতে এসে নিচ্ছেন দ্বিতীয় ডোজ।প্রায় প্রতিদিনই জেলা হাসপাতালে ভ্যাকসিন নিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা ভিড় করছেন।সাধারণ মানুষদের দেওয়ার জন্য যে ভ্যাকসিন এসেছে, তার মধ্যে থেকেই ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের ।ফলে সাধারণ মানুষদের ভ্যাকসিনের সংখ্যায় টান পড়ছে।ভোট না মিটলে এবং আরও বেশি পরিমাণে ভ্যাকসিন না পাঠানো হলে আগামীদিনে ভ্যাকসিনের সংখ্যায় যে ব্যাপকভাবে টান পড়বে, তা মেনে নিয়েছেন জেলা স্বাস্থ্য দফতরের একজন আধিকারিক। সোমবার জেলা হাসপাতালে ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য ভিড় করেছিলেন প্রায় ৫০০ মানুষ।যদিও ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য জেলা হাসপাতালে ভিড় করেছিলেন প্রায় ৪০০জন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান।কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্য সাধারণ মানুষদের মধ্যে মাত্র ৫০ জনের মত ভ্যাকসিন নিতে পেরেছেন।বাকিদের ফিরে যেতে হয়েছে বাড়িতে।ফলে প্রতিদিনই জেলা হাসপাতালে ভ্যাকসিন দেওয়ার লাইনে হচ্ছে গন্ডগোল। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের ওই আধিকারিক জানিয়েছেন,’ এত কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের যে আমাদের ভ্যাকসিন দিতে হবে, সেটা আমাদের হিসাবের বাইরে ছিল।সাধারণ মানুষদের জন্য আসা ভ্যাকসিন থেকেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের ভ্যাকসিন দিতে হচ্ছে।আর সেই কারণে সাধারণ মানুষদের ভ্যাকসিনের পড়ছে টান।ভোট মিটে গেলে এবং আরও বেশি পরিমাণে ভ্যাকসিন নিলে তবেই এই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।’জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, নতুন করে ২৫হাজার কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন এসেছে।তার মধ্যে ইতিমধ্যেই দেওয়া হয়ে গিয়েছে প্রায় ৭ হাজার ভ্যাকসিন।বাকি ১৮ হাজার ভ্যাকসিন দিয়ে ২২ তারিখের ভোটের পরে মাত্র দু -এক দিন চালানো সম্ভব হবে।নতুন করে আসেনি কোভ্যাকসিন।ফলে স্বাস্থ্য দফতরে যে স্টক রয়েছে, তাতে নতুন করে আর কাউকে কোভ্যাকসিন দেওয়া সম্ভব নয়।শুধু দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া সম্ভব হবে।আরও বেশি করে ভ্যাকসিন পাঠানোর জন্য আবেদন করা হয়েছে বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। আমি হিসাবে আরেকটি বিষয় বিশেষ সূত্রে জানা যায়, তা হলো গত
11 এপ্রিল পর্যন্ত পাওয়া হিসাব বলছে, দেশে এখনও পর্যন্ত ব্যবহৃত 10 কোটি (Covid vaccine) ডোজের মধ্যে 44 লক্ষ ডোজ নষ্ট হয়েছে।
সারা দেশে টিকাকরণ প্রকল্পে ব্যবহৃত মোট টিকার অন্তত 23 শতাংশই নষ্ট হয়েছে। অপচয়ের তালিকায় শীর্ষে তামিলনাড়ু। মোট টিকার 12 শতাংশ সে নষ্ট করেছে। এর পর পর আছে যথাক্রমে Haryana (9.74%), Punjab (8.12%), Manipur (7.8%) এবং Telangana (7.55%)। অপচয় বিতর্কে নাম জড়িয়েছে মহারাষ্ট্রও। কেন্দ্রের তথ্যের অধিকার সূত্রে এই তথ্য সামনে এসেছে। যে সব রাজ্যে অপচয় অনেক কম তাদের মধ্যে শীর্ষে বাংলা (ওয়েষ্ট বেঙ্গল)। তারপর আছে কেরল, হিমাচল প্রদেশ, মিজোরাম, গোয়ার মতো অঞ্চলগুলি।
আগামী পহেলা মে থেকে আঠারো বছর বয়স থেকে শুরু হওয়া সর্বসাধারণের উদ্দেশ্যে টীকাকরণ কি আদৌ সম্ভব হবে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে!