আজ নীল ষষ্ঠী! কেনো আজকের দিনটি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ?

নীল বা নীলকন্ঠ শিবের অপর নাম ।সেই নীল বা শিবের সাথে নীল চণ্ডিকা বা নীলা বতি পরমেস্বরি র বিবাহ উপলক্ষ্যে লৌকিক আচার অনুষ্ঠান সংগঠিত হয় । কাহিনী অনুসারে দক্ষ যজ্ঞর অনুষ্ঠানে দেহত্যাগের পর শিবজায়া সতী পুনরায় সুন্দরী কন্যা রূপে নীল ধজ রাজার বিল্য বনে আবির্ভূত হন । রাজা তাকে নিজ কন্যা রূপে লালন পালন করে শিবের সাথে বিবাহ দেন । বাসর ঘরে নিলাবতি শিবকে মোহিত করেন এবং পরে মক্ষিকা রূপে ফুলের সাথে জলে নিক্ষিপ্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন । এরপর রাজা ও রানী শোকে প্রাণ বিসর্জন দেন । নীল পুজোয় শিব ও নিলাবতির বিবাহ অনুষ্ঠানের স্মারক ।
নিম বা বেলের কাঠ থেকে নীলের মূর্তি তৈরি করা হয় । চৈত্র সংক্রান্তির আগেই নীলকে মণ্ডপ থেকে নিচে নামানো হয় । নীল পুজোর আগের দিন হয় অধিবাস এবং অধিক রাত্রে হয় হাজরা পূজা । যার অর্থ শিবের বিবাহ উপলক্ষ্যে সকল দেবতাকে আমন্ত্রণ জানানো । এই পুজোয় শিবের সঙ্গী সাথী দের পোরা শোল মাছের ভোগ দেওয়া হয় । পরের দিন নীল পুজোর সময় নীলকে গঙ্গা জলে স্নান করিয়ে নতুন লাল সালু কাপড় পরিয়ে কম করে সাত টি বাড়িতে ঘোরানো হয় । আর সেই কারণেই নীল সন্ন্যাসীরা ওই একই রকমের লাল কাপড় , মাথায় পাগড়ি ও গলায় রুদ্রাক্ষ মালা এবং হাতে ত্রিশূল নিয়ে নীলকে সাথে করে মিছিল করেন । এদের প্রধান বা দল পতিকে বলা হয় বালা । গৃহস্থ মহিলারা উঠানে আলপনা দিয়ে নীলকে আহ্বান করে বরাসনে বসিয়ে তার মাথায় তেল ও সিঁদুর লেপন করেন
উক্ত দিবসে সন্তনবতি হিন্দু নারীরা সারাদিন উপবাস থেকে সন্তানের মঙ্গল কামনা ও আয়ু বৃদ্ধির কামনায় নীল ষষ্ঠীর ব্রত পালন করেন । আবার অনেকেই এই দিন উপবাস থেকে নীল পুজোর পর সন্ধ্যা বেলায় শিব মন্দিরে বাতি দিয়ে জল গ্রহণ করেন । এই বিশেষ চিরা চরিত প্রথা বা রীতি নীল ষষ্ঠী নামে সুপরিচিত ।