ম্যাজিক করেই ঘর সংসার! একমাত্র মেয়ের পড়াশুনা এবং তারপর বিয়ে । ৩২ বছর ধরে রানাঘাটের এই দম্পতি আগামী প্রজন্মের কাছে শেখাচ্ছেন মনোরঞ্জনের ছলে বিজ্ঞান শিল্পকলা এবং অনুশীলনের নানান কায়দা

ম্যাজিক করেই ঘর সংসার! একমাত্র মেয়ের পড়াশুনা এবং তারপর বিয়ে । ৩২ বছর ধরে রানাঘাটের এই দম্পতি আগামী প্রজন্মের কাছে শেখাচ্ছেন মনোরঞ্জনের ছলে বিজ্ঞান শিল্পকলা এবং অনুশীলনের নানান কায়দা

মলয় দে নদীয়া :-
ম্যাজিক করেই ঘর সংসার, একমাত্র মেয়ের পড়াশোনার পর বিয়ে, ৩২ বছর ধরে রানাঘাটের এক দম্পতি বিভিন্ন এলাকা এবং স্কুলে স্কুলে শো করে চলেছেন ম্যাজিকের । এক আর এক যোগ করলে ২ হলেও ব্যবসায়িক পরিভাষায় বলা হয় স্বামী এবং স্ত্রী একই সাথে ব্যবসার পার্টনার হলে তা ১১ জনের সমতুল্য হয়।
রানাঘাটের রবিন কুমার ভট্টাচার্য এবং তার স্ত্রী বেবি ভট্টাচার্য এই উপমার সেরা নিদর্শন। বিভিন্ন প্রোগ্রামে স্বামীকে সহযোগিতা করতে করতেই নিজে ম্যাজিশিয়ান হয়ে ওঠা। ম্যাজিক কে ভালোবেসেই একমাত্র কন্যা সন্তান কে নাচ গান আবৃত্তির পাশাপাশি শিক্ষা দিয়েছিলেন নিজেদের পেশার। গ্রাজুয়েশন করার পর শান্তিপুরে বিয়ে দিয়েছেন মেয়ের। এখন ঝাড়া হাত-পা, বয়স বাড়লেও ম্যাজিকের প্রচার এবং প্রসার ঘটাতে এতটুকু ক্লান্ত হন না ওই ম্যাজিসিয়ান দম্পতি। চারচাকা গাড়ি কেনার সামর্থ্য না হলেও সকালের খাওয়া-দাওয়া সেরে একটি টুকটুকি গাড়িতে ম্যাজিকের যাবতীয় সরঞ্জাম তুলে নিয়ে বিভিন্ন শহর এবং গ্রাম গঞ্জের বিদ্যালয়ে পৌঁছে যান তারা। ছাত্র-ছাত্রীদের দেখান ম্যাজিক, ঝাড়ফুক মন্ত্র তন্ত্র এসব অলৌকিক বিষয়ে কিছুই নয় শেখান পেছনে ঢাকা শিল্পকলা বিজ্ঞান এবং অনুশীলনের পদ্ধতি।
এ প্রসঙ্গে বেবি ভট্টাচার্য বলেন, তার শশুর ননদ ও বিখ্যাত জাদুকর। তাই স্বামীর সাথে এই কাজে বেরোনোর জন্য পারিবারিক কোনো প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়নি বরং উৎসাহ পেয়েছেন অনেকটাই। এমনকি বিয়ের আগে মেয়েকেও নিয়ে যেতেন একই সাথে। নদীয়ার শান্তিপুর মালঞ্চ উচ্চ বিদ্যালয়ে তার স্বামী এবং তিনি ম্যাজিক দেখিয়ে জানালেন বিভিন্ন বড় বড় স্টেজ প্রোগ্রাম হলেও ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে ম্যাজিক দেখিয়েই সবচেয়ে বেশি তৃপ্তি হয়। তবে ভবিষ্যতে এদের মধ্যে থেকেই যদি কোন ম্যাজিশিয়ান তৈরি হয় তাহলে আরো বেশি খুশি হবেন। তবে প্রত্যেক ম্যাজিসিয়ানের আলাদা একটি নাম থাকে সেক্ষেত্রে তিনি নিজের নাম পরিবর্তিত করেননি বলেন স্বামী ই শিক্ষাগুরু তাই তার পরিচয়ে পরিচিত হওয়ায়াই গর্বের।
ম্যাজিসিয়ান রবিন ভট্টাচার্য জানান, কুসংস্কার মুক্ত হওয়ার ফলে ম্যাজিকের প্রচার এবং প্রসার অনেকটাই বেড়েছে। বিশেষ করে ছাত্রছাত্রীদের হাতের নাগালে বিভিন্ন ধরনের উপকরণ চলে আসার ফলে তারা অনেকটাই বিজ্ঞানমনস্ক হয়েছে। সামাজিক এবং পরিবেশগত বিভিন্ন বার্তা এই ম্যাজিকের ছলেই তাদের মনের মধ্যে গেঁথে দেওয়া যায়। যা শিশু কিশোর মনের প্রভাব পড়ে আর তারাই তাদের বাড়ির পরিবেশ বদলাতে পারে। তাই মনোরঞ্জন এবং কৌতুকের মধ্যে দিয়ে কখনো পাপেট ব্যবহার করে কখনো বা অন্য উপায়ে বিভিন্ন ধরনের বার্তা দেওয়া হয়ে থাকে