ফুচকা থেকে আইসক্রিম! মেনু কার্ড সহ বারো পদের এলাহী আয়োজন সরকারি বিদ্যালয়ে সরস্বতী পুজোর প্রীতিভোজে

ফুচকা থেকে আইসক্রিম! মেনু কার্ড সহ বারো পদের এলাহী আয়োজন সরকারি বিদ্যালয়ে সরস্বতী পুজোর প্রীতিভোজে

মলয় দে নদীয়া:- ফুচকা দিয়ে শুরু আইসক্রিমের শেষ রয়েছে মোমোর স্টল ! মাঝে টেবিল চেয়ারে বসে স্যালাড সস, মটরশুঁটির কচুরি, ছোলার ডাল, ফ্রাইড রাইস চিকেন কষা , চাটনি পাপড়, হট গোলাপজাম মিষ্টি আইসক্রিম হাজমোলা ১২ রকম লোভনীয় খাদ্য খাবার। তবে নেই সানাই!
না না কোনো বিয়ে বাড়ির মেনু নয়! সরকারি এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সরস্বতী পুজো উপলক্ষে ছাত্র-ছাত্রীদের স্কুলে খাওয়ানো হলো বিয়ে বাড়ির মত প্রীতিভোজ। যদিও বিদ্যালয়ে কর্তৃপক্ষ সরস্বতী পূজা উপলক্ষে এই কথাটি মানতে নারাজ কারণ ভালো কাজে, সমালোচনা বেশি। বিগত একটি বছরে এমনই এক সমালোচনা এড়াতে গত বছর থেকে শুধুই প্রীতিভোজ।

এমনই এক অভিনব উদ্যোগ নেওয়া হলো শান্তিপুর বাইগাছি পাড়া কৃত্তিবাস প্রাথমিক বিদ্যালয় তরফ থেকে। ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যা তিন শতাধিক হলেও তাদের অভিভাবক পার্শ্ববর্তী বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকা এমনকি এলাকাবাসীও আমন্ত্রিত ছিল এই প্রীতিভোজে। প্রধান শিক্ষক অগ্নিশ্বর বসাকের কাছে এই এলাহী আয়োজনের খরচ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি জানান অন্যান্য সরকারি বিদ্যালয়ে যেমন চাঁদা নেওয়া হয় তাদের ক্ষেত্রেও সরস্বতী পুজো বাবদ ৩০ টাকা নেওয়া হয়েছে তবে শিক্ষক শিক্ষিকাদের একান্তই ব্যক্তিগত সহযোগিতায় এ অসম্ভব সম্ভব হয়েছে। মূলত এই উদ্যোগ শিশুদের স্কুলমুখী করে তোলার জন্য তবে চিরাচরিত মিড ডে মিলেও মাঝেমধ্যেই থাকে নানান চমক।

শুধু এই বছর নয় বেশ কয়েক বছর আগে থেকে স্কুলের তরফ থেকে এমনই এক প্রীতিভোজের আয়োজন করা হয় যেখানে ছিল একাধিক পদ। বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা দিবসেও এইরকমই এলাহী আয়োজন থাকে। ১৫ ই আগস্ট এ ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে বিলানো হয় চাওমিন ।
পড়াশোনার ক্ষেত্রেও ওই বিদ্যালয়ে নাচ গান আবৃত্তি শেখানো হয় বাড়তি দায়িত্ব নিয়ে। আর সেই কারণেই এই সরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার জন্য অন্ধকার রাত থেকে বাচ্চা ভর্তির লাইনে দাঁড়ান অভিভাবকরা।

সাধারণত সরস্বতী পূজোর পরে স্কুলে ছাত্র-ছাত্রীদের লুচি আলুর দম কিংবা খিচুড়ি বড়জোর ফ্রাইড রাইস খাওয়ানোর প্রচলন রয়েছে। তবে শিশুদের অতি প্রিয় ফুচকা আইসক্রিম সহ এই বারো রকমের পদ স্কুলে খাওয়ানো রীতিমতো বেনজির। তবে শান্তিপুর বাইগাছি পাড়া কৃত্তিবাস প্রাথমিক বিদ্যালয় যে রাজকীয় আয়োজন করে থাকেন তাতে খুশি অভিভাবক থেকে এলাকাবাসী সকলেই। শুধু স্কুলের আচার অনুষ্ঠান নয় শিক্ষার পরিকাঠামো অন্যান্য স্কুলের থেকে অনেকটাই ভালো বলে মনে করেন বেশ কিছু অভিভাবকেরা। আর সেই কারণেই এই স্কুলে ভর্তি করার জন্য অভিভাবকদের লাইন থাকে ভোররাত থেকে।

কি ভাবছেন দর্শক! আবারো বিদ্যালয়ে ভর্তির ইচ্ছা জাগছে মনে ? আমাদেও অন্য অভিজ্ঞতা। মাঝেমধ্যেই মিড ডে মিলে অনুন্নত খাদ্য খাবারের খবর পরিবেশন করতে করতে বিষন্ন মনে এ ধরনের খবরের স্বাদ ই আলাদা।