আবারো ভাগীরথীর ভাঙ্গনের কবলে নদীয়ার নৃসিংহপুর চৌধুরীপাড়া এলাকার অন্যতম প্রধান রাস্তা! এলাকার ছয়টি গ্রামের প্রায় দশ হাজার মানুষ পড়েছেন বিপাকে, চাইছেন সরকারি উদ্যোগে নদী খনন এবং রাস্তা পুনরুদ্ধার
মলয় দে, নদীয়া:- একটু একটু করে ভাগীরথী গর্ভে তলিয়ে গেছে বাপ ঠাকুর দাদা আমলের চাষের জমি, কেউ হয়েছেন ভিটে ছাড়া কেউবা নিজের জমি খুইয়ে অন্য এলাকায় রয়েছেন ভাড়া। নদীয়ার শেষ প্রান্ত শান্তিপুর হরিপুর পঞ্চায়েতের অত্যন্ত প্রান্তিক নৃসিংহপুর চৌধুরীপাড়া র অন্যতম প্রধান রাস্তা এখন জলের তলায়। সম্প্রতি কিছুদিন আগেও ওই এলাকার নৌকা ঘাট ভেঙেছিলো জলের তোড়ে, ফলে কৃষিকাজ এবং ভাগীরথী পেরিয়ে পূর্ব বর্ধমানে শ্রমিকের কাজ করতে যাওয়া অনেকেই পড়েছিলেন সমস্যায় কিন্তু এবার দুয়ারে ভাগীরথী রাস্তা বলতে আর কিছু নেই। সম্প্রতি কয়েক বছর আগে নৃসিংহপুর ঢোকার রাস্তা হিসেবে কিছুটা পিচের এবং কিছুটা ইটের রাস্তা মঞ্জুর হয় ভাগীরথী বরাবর যাতে স্থানীয় বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষজন কৃষিকাজ এবং নৌকা পারাপারের উদ্দেশ্যে যাতায়াত করতে পারেন। তবে পুরো অংশ শেষ হওয়ার আগেই জলের তলায় প্রস্তাবিত রাস্তাটি। এলাকার বাসিন্দারা জানাচ্ছেন গতকাল মধ্যরাতে সাইক্লোন ডানার প্রভাবে জোরে ঢেউ আসার ফলেই হয়তো আঘাত লেগে ভেঙেছে প্রায় এক বিঘা জমি আর এরই মধ্যে পড়েছে প্রায় ১০০ থেকে ১২০ মিটার ওই রাস্তাটি আর এর ফলে বিপাকে পড়েছেন,নতুন চড়া চৌধুরীপাড়া কুলে পার,হালদার পাড়া , গৌরনগরপাড়া তেওয়ারি চর সহ এলাকার প্রায় ৬ টি গ্রামের ১০,০০০ মানুষ । তারা জানাচ্ছেন গ্রাম থেকে বাসস্ট্যান্ডে যাওয়ার অন্যতম প্রধান রাস্তা ছিল এটা। আর তার ফলেই চিকিৎসা থেকে শুরু করে স্কুল কলেজ যাওয়া ছাত্রছাত্রী এবং ব্যবসা-বাণিজ্য কৃষিকাজ এবং শ্রমজীবী মানুষের ঘুরে যেতে হচ্ছে প্রায় ছয় সাত কিলোমিটার যার জন্য লাগছে টোটো ভাড়া।
তবে ভাগীরথী পাড় বাধাইয়ের কাজ জেলা পরিষদ এবং অন্যান্য সরকারি তহবিল থেকে সামান্য ব্যয় বরাদ্দে কোন কোন জায়গায় শুরু হলেও এলাকাবাসীদের মতে তা অপরিকল্পিত এবং আন্তরিকতা বিহীন তাই মাঝেমধ্যে কয়েক বস্তা বালি এবং কখন কখনো বাসের খাচা ফেলে গেলেও আদতেও কোন স্থায়ী সমাধান লক্ষ্য করা যায়নি। স্থানীয় হরিপুর পঞ্চায়েতের বিরোধী দল বিজেপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে মূলত কাজের আগেই কাট মানি এবং প্রকল্প মূল্যের সব খরচ নিজেদের পকেটে পরলে এই অবস্থাই হয়। অন্যদিকে তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত থেকে জানানো হয়েছে ভাগীরথী কিংবা যেকোনো নদী দেখভাল করে থাকেন কেন্দ্রীয় সরকারের দপ্তর সেক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের শেষ দপ্তর সহযোগিতা করলেও dressing করে বালি খনন না করলে এই অবস্থাই হবে।
স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব জানাচ্ছেন সাধারণ মানুষের অভিজ্ঞতা কিংবা চাহিদার কথা মান্যতা না দিয়েই তারা তাদের মতন কাজ করে যান সাময়িকভাবে দুই একটা বালির বস্তা ফেলে কিন্তু স্থায়ী সমাধান হয় না এ রাজ্যের সরকারের সদিচ্ছায়।
তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান বীরেন মাহাতো জানাচ্ছেন তিনি নিজেও এই গ্রামের বাসিন্দা, নদী কেন্দ্রীয় সরকারের তত্ত্বাবধানে হলেও বর্তমান রাজ্য সরকার তাদের সাধ্য অনুযায়ী পাড় বাঁধানোর বিভিন্ন ব্যবস্থা নিয়েছে। তবে একদিকে কাজ করা হলে ভাঙছে অন্য জায়গা থেকে। তবে রাস্তা হোক কিংবা পাড় বাঁধন সবটাই করছে রাজ্য সরকার।
তবে গ্রামের মানুষ বোঝেন না কেন্দ্র কিংবা রাজ্য সরকার তৃণমূল অথবা বিজেপি। একের পর এক চাষের জমি ভিটেমাটি এবার রাস্তা জলের তলায় তাই স্থায়ীভাবে ভাগীরথীর পাড় বাঁধিয়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তা আবারো করে দেওয়া হোক চলাচলের উপযোগী।