মলয় দে নদীয়া :-নদীয়ার শান্তিপুর হরিপুর পঞ্চায়েত এলাকার গৌরহরিপাড়ার তৃণমূল কর্মী বলে দাবি করা শতাধিক সংখ্যালঘু মানুষজন গতকাল রাতে যোগদান করেন বিজেপিতে। তাদের অভিযোগ স্থানীয় এবং ৭৩ নাম্বার বুথের তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য অসীম বালা বিগত ১০ বছরেও নাকি তাদের রাস্তা করে দেয়নি। রাজ্য সরকারের প্রতি বিভিন্ন অভিযোগ থাকলেও মূলত মেম্বারের প্রতি ক্ষোভেই নাকি তাদের দলত্যাগ। তবে, ডান বাম নয় সরাসরি বিজেপি!
স্থানীয় বিজেপি বুথ কর্মকর্তা সুধীর দাসের বাড়ির উঠান সন্ধ্যে থেকেই ভীড়, যোগদানকারীরা নিজেরাই দীর্ঘক্ষণ প্রতীক্ষায় ছিলেন নেতৃত্বের হাত থেকে পতাকা নেওয়ার। শহর বিধানসভা এবং জেলা নেতৃত্ব অমিত বৈরাগী, সুব্রত কর, ডঃ সোমনাথ করেরা ব্যস্ত ছিলেন ব্লকেরই অন্য একটি পঞ্চায়েত এলাকার মিটিংয়ে।
মাঝে এক পশলা বৃষ্টি লোডশেডিং এ সবই উপেক্ষা করে তারা প্রতীক্ষায় অনড়।
অবশেষে রাত ন’টায় এসে পৌঁছালেন নেতৃত্ব, দিনের আলোয় পরের দিন যোগদান করানোর ইচ্ছা, বিফলে যায় তাদের আগ্রহে। তারা ওই এলাকারই শতাধিক সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ। যোগদানের শর্ত একটাই পরের দিন সকালে নেতৃত্বকে দেখে আসতে হবে রাস্তার চেহারা।
যোগদান করে যোগদানকারীরা জানালেন, কেন্দ্র সরকার আবাস যোজনার অর্থ, বিভিন্ন ধরনের ভাতা, ভ্যাকসিন, সরকারি রেশন, বিভিন্ন ধরনের প্রকল্প কখনো জাতি দেখে দেন না, অথচ এ রাজ্যে বিজেপিকে সাম্প্রদায়িক বলে, এবং কখনো কখনো এনআরসির ভয় দেখিয়ে সংখ্যালঘু কে ভোট ব্যাংঙ্ক সুরক্ষিত করে, নির্বাচনী বৈতরণী পার করে তৃণমূল। অথচ তারা হিন্দু মুসলমান পাশাপাশি সুসম্পর্কে বসবাস করছে দীর্ঘদিন নির্বিবাদে।
তাই এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে, কেন্দ্রীয় সরকারকে আরো মজবুত করতে, প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের দেশ গড়তে, দুর্নীতি এবং স্বজন পোষণমুক্ত পঞ্চায়েত গড়তে তাদের এই সিদ্ধান্ত।
এ প্রসঙ্গে জেলার নেতৃত্ব ডঃ সোমনাথ কর বলেন, ভাবতে খারাপ লাগছে, এত উন্নয়নের রাজ্যে বর্ষার প্রথম বৃষ্টিতেই , এলাকার মানুষ হাফপ্যান্ট পড়ে অন্ধকারের মধ্য দিয়ে কাদা পেরিয়ে, যোগদান করতে এসেছেন। উনারা থাকবেন সসম্মানেই।
সুব্রত কর বলেন, জয় শ্রীরাম হিন্দু ধর্মের আবেগ হতে পারে তবে বিজেপির স্লোগান কখনোই নয়, বিজেপির স্লোগান হলো বন্দেমাতরম, ভারত মাতার জয়ধ্বনি। কেউ যদি আল্লাহু আকবর বলে ভারত মাতার জয় বলতে পারে সে প্রকৃতপক্ষেই এ দেশের সন্তান। নিজ নিজ ধর্ম পালনে, বিজেপি কখনো বাধা দেয় না। বরং তৃণমূল তাদের কাছে গিয়ে বিজেপিকে সাম্প্রদায়িকের তকমা লাগিয়ে নানান ভাবে ভুল বুঝিয়ে থাকেন। তবে সংখ্যালঘু ভাই-বোনেরা এখন বুঝতে পারছে। বিজেপির সংখ্যালঘু মোর্চা রয়েছে রাজ্য জেলা ব্লক স্তরে। যেখানে জৈন খ্রিস্টান মুসলমান সব ধর্মের মানুষজন স্বসন্মানে বিজেপি করে। নদীয়া জেলার সভাপতি জোসেফ মন্ডল নামে এক খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী ভাই। তারা প্রাকৃতিক দুর্যোগে এবং রাত্রি হয়ে যাওয়ার কারণে আজ উপস্থিত হতে পারেননি তবে আগামী দিনে ইনাদের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ করিয়ে দেওয়া হবে। এই পঞ্চায়েতের হরিণদী গ্রামে বিজেপি প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছেন এক সংখ্যালঘু ভাই। গয়েশপুরের মতন সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় আমাদের সংগঠন অতি দ্রুততার সাথে শ্রীবৃদ্ধি ঘটেছে।
তাই তৃণমূল সম্পর্কে সংখ্যালঘুদের আত্মপোলব্ধি পরিবর্তিত হয়েছে, দিকে দিকে সংখ্যালঘু এলাকাতেও ছড়িয়ে পড়ছে প্রধানমন্ত্রীর সব কা সাথ সব কা বিকাশ।
এদিনের যোগদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, গ্রাম সভার প্রার্থী সাধন হালদার,
পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী সুপর্ণা বর্মন,জেলা পরিষদের প্রার্থী শিলা হালদার সহ বিভিন্ন মণ্ডল এবং শক্তি প্রমুখ নেতৃত্ব।
এদিনের যোগদান প্রসঙ্গে, প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য বর্তমান তৃণমূল প্রার্থী অসীম বালা বলেন তিনি সংবাদ মাধ্যমের কাছেই প্রথম শুনলেন, তবে শতাধিক সংখ্যালঘু পরিবার ওই এলাকায় বাস করে না। সমস্ত উন্নয়ন একসঙ্গে করা সম্ভব হয় না তবে ধীরে ধীরে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প এবং উন্নয়ন পৌঁছেছে গ্রামে দুই একটি রাস্তা বাকি থাকলে তার জন্য অন্য দলে যোগদান বোকামি ছাড়া আর কিছু না। তবে যদি যোগদান করে থাকে তারা কেউই তৃণমূল কর্মী সমর্থক নয়।





