॥স্থগিত রাখা হল সপ্তম চাকদহ বই মেলা॥
সততই উত্সব মুখর চাকদহ ও চাকদহবাসী। রথ যাত্রা থেকে কাত্তিক পূজা মানুষের হাসি মুখের উত্তাল হওয়া বয় চাকদহের বাতাসে ।দুর্গাপূজা,কালী পূজার ভিড়ের কথা তো স্বাভাবিক।কিন্তু বইমেলা…..ফুল মেলার আনন্দ…. ভিড় এত আর কোথায়? চাকদহের আনন্দ মুখরও বই প্রেমী মানুষের উচ্ছ্বাস বই মেলা কে করে তুলেছে এক আনন্দ মেলা । প্রতি বছর ডিসেম্বরের এই শীতের কয়েকটি দিন মানুষের দেহ -মন ,আশা- ভরসা, আনন্দ-কলতান, কল্প, রুচি- পছন্দ সবই জুড়ে নেই নবারুন মাঠের সুসজ্জিত বই মেলার ময়দান । প্রতি বছর আগস্ট মাসের মাঝামাঝি থেকেই শুরু হয়ে যায় মেলা প্রস্তুতি । আগের বছর চাকদহ পৌরসভার উদ্যোগে অতি সফল ভাবে সম্পন্ন হয়েছে ষষ্ঠ চাকদহ বইমেলা -২০১৯।প্রতি মানুষের ঘ্রাণে আছে সেই বই মেলার সুবাসিত আনন্দ আঘ্রাণ ।তাই এখনো সবাই মুখিয়ে আছে আশা ভরসার সেই আনন্দ দিন গুলিকে কাছে পেতে …চেটে পুটে দিন গুলিকে উপভোগ করতে ।
কিন্তু” দিনগুলি মোর সোনার খাঁচায় রইলো না ….সে যে আমার নানা রঙের দিন গুলি “……কোভিড-১৯ আবহ চলছে বিশ্ব জুড়ে ।কোভিডের করাল গ্রাস কেড়েছে তরতাজা জীবন সহ মানুষের কর্ম মুখরতা । এক দুর্বিষহ দিন দেখছে মানুষ । শীত বাড়লেই কোভিড আবার হতে পারে আরো সক্রিয় । আর আমাদের চাকদহের কথা তো নতুন করে কিছু বলবার নেই । সকলেই অবগত কী ভয়ানক ভাবে ছড়িয়েছে কোভিড নামের এই মারন ভাইরাস ।আজও এই মুহূর্তে নতুন সংক্রমণ১৬ জনের( ৮টা পৌর এলকায় আর বাকী টা পঞ্চায়েত এলকায় )। তাই সাবধানী বই মেলা কমিটি ও সর্বপরি উদ্যোগী চাকদহ পৌর সভা। এই বারের মতো বই মেলার মতো এতবড় উত্সবের আয়োজন করে কোরোনা সংক্রমন কে স্বাগত না জানানোই সমীচীন ।
দ্বিতীয় বিষয়টিও অনুরূপ ভাবে বিবেচনা করেছেন
চাকদহ বই মেলা কমিটির মাননীয় সদস্যগণ ।বিষয় টি এই রকম….. স্কুল কলেজ বন্ধ ।ভার্চুয়াল পঠন পঠান চলছে। কারণ সংক্রমন কে বেধে ফেলা ।কিন্তু এর মধ্যেই বই মেলায় স্কুল পড়ুয়াদের আমন্ত্রণ করে বিপদের মুখমুখী না ঠেলায় ভালো ।
তৃতীয় বিষয়টি আরো বিবেচনার বিষয় চাকদহ বই মেলায় অসংখ্য বই এর স্টল থাকে। অধিকাংশই আসে অনেক দূর দূর থেকে।বিরাট খরচা করতে হয় স্টলের মলিক ও পুস্তক প্রকাশনা সংস্থা কে । তারও একটু লাভের মুখ দেখতে আসে ।আর এই লাভের মুখ দেখা না দেখাটা নির্ভর করে বই মেলা তে আগত পুস্তক প্রেমী মানুষের বই কেনা অর্থাত বই বিক্রি বেশি হলে তবে খরচ খরচা বাদ দিয়ে লাভের দিকটা আসে ।কিন্তু চাকদহের অধিকাংশ বই প্রেমী ক্রেতা গণ হলেন চাকদহের সাধারণ মানুষ।কিন্তু দীর্ঘ লক ডাউন পর্বের কারণে মানুষের আয়ের উত্স ক্ষেত্রে বেশ ভাটা গেছে । তাই পুস্তক প্রেমী চাকদহের মানুষ হলেও এবছর ক্রেতার সংখ্যা কমতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে ।
ইতিমধ্যেই চাকদহ বই মেলা কমিটি হারিয়েছে বেশ কয়েক জন অভিজ্ঞ, কর্ম দক্ষ, বই মেলার কর্মবীর কে ।হারিয়েছি মাননীয় আনন্দ মণ্ডল মহাশয় কে….. হারিয়েছি কোভিড সংক্রমণ জনিত কারণে জয়ন্ত চ্যাটার্জীর মতো সদস্যকে…..এছাড়া আরো বেশ কিছু গুণী সদস্য কে।তাই একটু ঝুঁকি সামলে নেবার বিষয়কে মাথায় রাখতেই হয় ।
সব শেষে আজকের সভাতে সর্বসম্মতিক্রমে এই বছর বই মেলা উদ্যোগ গ্রহনের সিদ্ধান্তকে স্থগিত
রাখা হলো ।
থাক না এবার….. যাক না চলে কোভিড।আবার নতুন উদ্যমে ভাবা যাবে নতুন বছরে সপ্তম চাকদহ বই মেলা -২০২১।
শেষ ভালো যার সব ভালো তার । অসাধারণ নিখুঁত ভঙ্গিতে পেশ হলো ষষ্ঠ চাকদহ বই মেলার আয় ব্যয়ের হিসেব ।অসংখ্য ধন্যবাদ প্রাপ্তি রইলো বইমেলা কমিটির সম্পাদক শ্রী রাজেশ চ্যাটার্জী ও কোষাধক্ষ অধ্যাপক শ্রী উত্তম পাল মহাশয় কে ।ভেঙে দেওয়া হলো ষষ্ঠ চাকদহ বই মেলা কমিটি । আবার নতুন দিনের আশায় নতুন আলোর সন্ধানে ।ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন ।মন কে তৈরি রাখুন আগামী বই মেলার আনন্দের স্বাদ নিত….