লাগাতার বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত দক্ষিণবঙ্গের সবজিবাজার, হু হু করে বাড়ছে দাম

লাগাতার বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত দক্ষিণবঙ্গের সবজিবাজার, হু হু করে বাড়ছে দাম

নবমী থেকেই গোটা দক্ষিণবঙ্গজুড়ে লাগাতার বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। কোথাও হালকা, কোথাও মাঝারি, আবার কোথাও একনাগাড়ে ভারী বৃষ্টি হয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, হাওড়া, হুগলি, নদিয়া ও মুর্শিদাবাদ—এই জেলাগুলির বিভিন্ন প্রান্তে টানা বৃষ্টির জেরে জল জমেছে চাষের জমিতে। বিশেষত সবজি চাষের ক্ষেতগুলিতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে ফসলের। কৃষকরা জানিয়েছেন, এমন অবস্থায় অনেক ক্ষেতেই পচে গেছে কচি গাছ, নষ্ট হয়েছে ফুলকপি, বাঁধাকপি, পটল ও বেগুনের চারা। ফলে উৎসবের পর থেকেই সবজিবাজারে দেখা দিয়েছে অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি।

ইতিমধ্যেই কার্তিক মাস পড়ে গিয়েছে। সাধারণত এই সময়ে গ্রামেগঞ্জে শীতকালীন শাকসবজি যেমন বাঁধাকপি, ফুলকপি, মুলা, পালং শাক ইত্যাদি সহজলভ্য হয়ে পড়ে। দামও থাকে মধ্যবিত্তের নাগালের মধ্যে। কিন্তু এ বছর চিত্রটা একেবারে উল্টো। লাগাতার বৃষ্টির জেরে কৃষকরা ঠিকমতো ফসল তুলতে পারেননি। পুজোর সময়ে আরতগুলিতে সবজির জোগান কমে যাওয়ায় এখনও পর্যন্ত সেভাবে বাজারে নতুন ফসল আসেনি।

ফলত, খুচরো বাজারে হু হু করে বেড়ে চলেছে দাম। পাইকারি হারে দাম কিছুটা স্থিতিশীল থাকলেও, খুচরো বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, কয়েকদিনের মধ্যেই সবজির দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। বর্তমানে আলু বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৩০-৪০ টাকা, বেগুন ১২০ টাকা, ফুলকপি ১৩০ টাকা, বাঁধাকপি ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৭০ টাকা, পটল ৫০ টাকা, ঝিঙে ৬০ টাকা, চাল কুমড়ো ৫০ টাকা এবং পালং শাক ১০০ টাকা কেজি দরে।

নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জের সবজি আরত জেলার অন্যতম বৃহত্তম কাঁচামালের বাজার। এখান থেকে প্রতিদিন ট্রেনে করে সবজি রওনা দেয় কলকাতা ও আশপাশের বিভিন্ন জেলার বাজারে। কিন্তু টানা বৃষ্টির কারণে সেই জোগানেও পড়েছে প্রভাব। অনেক আরতদারই জানিয়েছেন, কৃষকরা এখন ফসল তুলতে না পারায় আগের মতো পরিমাণে সবজি পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না।

ফলত, পাইকারি বাজারে চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ না থাকায় মধ্যস্বত্বভোগীদের উপর নির্ভর করতে হচ্ছে খুচরো ব্যবসায়ীদের। আর সেই কারণেই দাম বেড়েই চলেছে। কৃষক ও ব্যবসায়ী উভয়েই আশাবাদী, যদি আগামী সপ্তাহে আবহাওয়া স্বাভাবিক হয়, তবে ধীরে ধীরে বাজারে সরবরাহ বাড়বে এবং দামও কিছুটা কমবে। কিন্তু আপাতত টানা বৃষ্টির প্রভাবে সাধারণ ক্রেতার পকেটেই পড়ছে সবচেয়ে বেশি চাপ।