শুধুমাত্র কাঠ বাঁশ দড়ি সুতলি বিচুলিই নয়! প্রচুর পরিমাণে পাটের আঁশ লাগে মৃৎশিল্পীদের প্রতিমা নির্মাণের কাজে, রং তুলি সহ উপকরণের সবকিছুই অস্বাভাবিক হারে মূল্যবৃদ্ধি

শুধুমাত্র কাঠ বাঁশ দড়ি সুতলি বিচুলিই নয়! প্রচুর পরিমাণে পাটের আঁশ লাগে মৃৎশিল্পীদের প্রতিমা নির্মাণের কাজে, রং তুলি সহ উপকরণের সবকিছুই অস্বাভাবিক হারে মূল্যবৃদ্ধি

মলয় দে নদীয়া:-
শুধুমাত্র কাঠ বাঁশ বিচুলিই নয়! প্রচুর পরিমাণে পাটের আঁশ লাগে মৃৎশিল্পীদের প্রতিমা নির্মাণের কাজে। এ বিষয়ে শিল্পীরা জানাচ্ছেন, চলতি সিজিনে প্রায় ৪০ কেজি পাট এবং চার পাঁচ কাউন বিচুলি লাগে। বিভিন্ন পুজো কমিটির প্রতিযোগিতা এবং সম্প্রতি রাজ্য সরকারের অনুদান বৃদ্ধি পাওয়ার পর দুর্গা প্রতিমার আকার আকৃতি অনেকটাই বেড়েছে। তবে শুধু দুর্গা প্রতিমাই বা কেনো সম্প্রতি অত্যাধিক পুজোবৃদ্ধি হওয়া গণেশ চতুর্দশীর গণেশ মূর্তি ,বিশ্বকর্মা কালী দুর্গা সরস্বতী জগদ্ধাত্রী সব প্রতিমাই যেমন উচ্চতা বৃদ্ধি হয়েছে তেমনি বেড়েছে মাটি দিয়ে কাঠামো কিংবা চালির বিভিন্ন মাটির নকশা। আর এ ধরনের নকশা করতে গেলে এটেল মাটি দরকার হয় কিন্তু সে ক্ষেত্রেও রোদে কিংবা ঘন বর্ষায় আগুনের তাতে শুকাতে গেলে ফেটে যায় সৌখিন ডিজাইন কিংবা সু বিশাল আকৃতির মূর্তি তবে পাটের আঁশ মিশ্রিত মাটি ব্যবহার করলে সে সম্ভাবনা থাকে না আবার ওজনেও হয় হালকা। যদিও প্রাথমিকভাবে বিচুলি ব্যবহার করা হয় কিন্তু তার পরে যে মাটি লাগানো হয় ১০-১৫ কিংবা ২০ ফুট উচ্চতা দুর্গা প্রতিমা মাটি দিয়ে প্রস্তুত করলে ওজন দাঁড়িয়ে যায় প্রায় দু টনের কাছাকাছি। যা বহন করতে গিয়ে ভেঙ্গে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সেই কারণেই ইদানিং এই পাটের আঁশ ব্যবহারের প্রবণতা বেড়েছে অনেকটাই তবে সে ক্ষেত্রে পাটকাঠির গায়ে লেগে থাকা ফেঁশো কিংবা বাতিল পাট দিয়ে হয় না তাই বাজার থেকে উৎকৃষ্ট মানের লম্বা পাট উপযুক্ত দামে কিনে তার টুকরো টুকরো করে কেটে তুলোর মতন ফাটিয়ে সেই আঁশ ব্যবহার করা হয় মাটি মাখার সময়। নদীয়া শান্তিপুর শ্যামবাজার সৌরাজ বিশ্বাসের কারখানায় ইতিমধ্যেই সুউচ্চ ২১ টি দুর্গা প্রতিমা প্রস্তুত করা হয়ে গেছে যার মধ্যে কোনটি যাবে ব্যাঙ্গালোর কোনোটি বা ভিন রাজ্যে র বিভিন্ন প্রান্তে কলকাতাও আছে আবার শান্তিপুরের রয়েছে। তবে তার আগে গণেশ চতুর্দশী ইদানিং এই পুজোর প্রচলন বেড়েছে ব্যাপক সেক্ষেত্রেও উচ্চতা কোন অংশে কম নয়, দুর্গা প্রতিমার। ১০-১২- ১৫ ফুট উচ্চতা তো হতেই আছে। তবে কারখানা থেকে জানা গেছে উপকরণ হিসেবে বাঁশ কাঠ দড়ি সুতুলি বিচুলি রং তুলি এমনকি পাটের দামও যথেষ্ট চড়া তাই নির্মাণ খরচও বাড়ছে। তবে অনেকেরই ধারণা থাকতে পারে মাটি পাওয়া যায় বিনামূল্যে কিন্তু তা নয় বরং উল্টোটা বর্ষার মধ্যে মাটিরও দাম বেড়েছে যথেষ্ট। আর এই সব মিলিয়ে প্রতিমা নির্মাণে লভ্যাংশ কমেছে বলেই জানাচ্ছেন প্রতিমা নির্মাণের শিল্পীরা।

মৃৎশিল্পী সঞ্জয় দাস জানাচ্ছেন এই কারখানায় উচ্চতা এবং আর্টের প্রতিমার জন্য সকলে যোগাযোগ করেন প্রায় ছমাস আগে। তবে ১২-১৪ টি গণেশ প্রতিমা চলে গেলে আরও নতুন করে অর্ডার নেওয়া দুর্গা প্রতিমা বানানোর কাজে হাত দেবেন।